চারুপাঠ

চারুপাঠ

Table of Contents

  • ১. সততার পুরুস্কার
  • ২. মিনু
  • চারুপাঠ ষষ্ট শ্রেণী

১. সততার পুরুস্কার

সেকালে আরব দেশে তিনটি লোক ছিল- একজনের সর্বাঙ্গে ধবল, একজনের মাথায় টাক, আরেকজনের দুই
চোখ অন্ধ। আল্লাহ তাহাদের পরীক্ষার জন্য এক ফেরেশতা পাঠাইলেন। ফেরেশতা হইলেন আল্লাহর দূত |
তাহারা নূরের Cwatt এমনি কেহ তাহাদিগকে দেখিতে পায় AT | আল্লাহর হুকুমে তাহারা সকল কাজ
করিয়া থাকেন |

ফেরেশতা মানুষের রূপ ধরিয়া প্রথমে ধবলরোগীর নিকটে আসিলেন। তিনি তাহাকে বলিলেন, কী তুমি সবচেয়ে
ভালোবাসো?

ধবলরোগী বলিল, আহা! আমার গায়ের রং যদি ভালো হয়। সকলে যে আমাকে বড় ঘৃণা FCA |

স্বীয় দূত তাহার গায়ে হাত বুলাইয়া দিলেন | তাহার রোগ সারিয়া গেল | তাহার গায়ের চামড়া ভালো হইল |
তারপর আল্লাহর দূত পুনরায় তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, এখন তুমি কী চাও?

সে বলিল, আমি উট চাই |

দূত তাহাকে একটি গাভিন উট দিয়া বলিলেন, এই লও | ইহাতে তোমার ভাগ্য খুলিবে।
তারপর সেই ফেরেশতা টাকওয়ালার কাছে গিয়া বলিলেন, কী তুমি সবচেয়ে ভালোবাসো ?

সে বলিল, আহা! আমার এই রোগ যদি সারিয়া যায়৷ যদি আমার মাথায় চুল উঠে!

আল্লাহর দূত তাহার মাথায় হাত বুলাইয়া দিলেন | তাহার টাক সারিয়া গেল। তাহার মাথায় চুল গজাইল | দূত
পুনরায় বলিলেন, এখন তুমি কী চাও?

সে বলিল, গাভি।

তিনি তাহাকে একটি গাভিন গাই দিয়া বলিলেন, এই লও | ইহাতে তোমার ভাগ্য খুলিবে।

তারপর স্বীয় দূত অন্ধের কাছে গেলেন | গিয়া বলিলেন, কী তুমি সবচেয়ে ভালোবাসো ?

সে বলিল, আল্লাহ্‌ আমার চোখ ভালো করিয়া দিন। আমি যেন লোকের মুখ দেখিতে পাই।
স্বীয় দূত তাহার চোখে হাত বুলাইয়া দিলেন | তাহার চোখ ভালো হইয়া গেল।

তারপর তিনি তাহাকে বলিলেন, এখন তুমি কী চাও?

সে বলিল, আমি ছাগল চাই।

ফর্মা নং-১, চারুপাঠ-৬ষ্ঠ

2 সততার পুরস্কার

স্বীয় দূত তাহাকে একটি গাভিন ছাগল দিয়া বলিলেন, এই লও | ইহাতে তোমার ভাগ্য খুলিবে।

তারপর উটের বাচ্চা হইল, গাভির বাছুর হইল, ছাগলের ছানা হইল | এই রকম করিয়া উটে, গাভিতে, ছাগলে
তাহাদের মাঠ বোঝাই হইয়া গেল।

কিছুদিন পর আবার সেই ফেরেশতা পূর্বের মতো মানুষের রুপ ধরিয়া, সেই যে আগের ধবলরোগী ছিলি, তাহার
নিকট উপস্থিত হইলেন।

সেখানে গিয়া তিনি বলিলেন, আমি এক বিদেশি। বিদেশে আসিয়া আমার সব পুঁজি ফুরাইয়া গিয়াছে । এখন
আল্লাহর দয়া ছাড়া আমার আর দেশে ফিরিবার উপায় নাই। যিনি তোমারে সুন্দর গায়ের রং দিয়াছেন, সুন্দর
চামড়া দিয়াছেন, আর এত ধনদৌলত দিয়াছেন, তাঁহার দোহাই দিয়া তোমার কাছে একটি উট ঢাহিতেছি।

সে বলিল, উটের অনেক দাম, কী করিয়া দিই?

WAT দূত বলিলেন, ওহে ! আমি যেন তোমাকে চিনিতে পারিতেছি। তুমি না ধবলরোগী ছিলে, আর সকলে
তোমাকে দঘ্বুণা করিত? তুমি না গরিব ছিলে, পরে আল্লাহ তোমাকে ধনদৌলত দিয়াছেন?
সে বলিল, না, তা কেন? এসব তো আমার বরাবরই আছে।

তাহাই করিবেন |

তারপর স্বীয় দূত পূর্বে যে টাকওয়ালা ছিল, তাহার কাছে গেলেন। সেখানে গিয়া আগের মতো একটি গাভি
চাহিলেন। সেও ধবলরোগীর মতো তাহাকে কিছুই দিল না | তখন স্বীয় দূত বলিলেন, আচ্ছা, যদি তুমি মিথ্যা

তারপর স্বীয় দূত পূর্বে যে অন্ধ ছিল, তাহার কাছে গিয়া বলিলেন, আমি এক বিদেশি | বিদেশে আমার সম্বল
ফুরাইয়া গিয়াছে ١ এখন আল্লাহর দয়া ছাড়া আমার দেশে পৌঁছিবার আর কোনো উপায় নাই। যিনি তোমার
সেই ছাগল-বেচা টাকা দিয়া দেশে ফিরিয়া যাইতে পারি।

তখন সে বলিল, হ্যাঁ ঠিক cor | আমি অন্ধ ছিলাম, পরে আল্লাহ্‌ আমাকে দেখিবার ক্ষমতা দিয়াছেন | আমি গরিব
ছিলাম. তিনি আমাকে আমির করিয়াছেন। তুমি যাহা চাও লও। আল্লাহর কসম, আল্লাহর উদ্দেশ্যে যে জিনিস
লইতে তোমার মন চায়, তাহা যদি তুমি না লও, তবে আমি তোমাকে কিছুতেই ভালো লোক বলিব না।

ফেরেশতা তখন বলিলেন, বাস্‌। তোমার জিনিস তোমারই থাক | তোমাদের পরীক্ষা লওয়া হইল | আল্লাহ
তোমার উপর খুশি হইয়াছেন, আর তাহাদের উপর বেজার হইয়াছেন।

২০২৫

8
17

চারুপাঠ ৩

শব্দার্থ ও টীকা

ধবল – সাদা। HS | এক প্রকার চর্মরোগ_ এই রোগে শরীরে চামড়া ও চুল সাদা হয়ে যায়।
গাভিন – গর্ভধারণ করেছে এমন (গাভিন গরু) ١

আমির – ধনী। ধনবান।

সর্বাঙ্গে — (সর্ব+অঙ্গ ৯সর্বাঙ্গ+ এ বিভক্তি) সারা শরীরে | সমস্ত দেহে।
কসম — শপথ | দিব্যি |

স্বীয় দূত – আল্লাহর বার্তা বাহক। সংবাদবাহক।

নূর – জ্যোতি | আলো।

পুঁজি – সম্বল | মূলধন |

দোহাই – শপথ | কসম।

AeA — পাথেয়। APS ।

বেজার – Bap | 5798 |

পাঠের উদ্দেশ্য

সততা, পরোপকার ও নৈতিক মূল্যবোধ অর্জন |

পাঠ-পরিচিতি

সাধুরীতিতে রচিত এই গল্পে হাদিসের কাহিনি বর্ণিত হয়েছে। এই গল্পের মূল বাণী হচ্ছে আল্লাহ মানুষকে
পরীক্ষা করেন এবং সথলোককে যথাযথ পুরস্কার দেন।

আরব দেশের তিন জন লোককে পরীক্ষা করার জন্য আল্লাহ একজন ফেরেশতা পাঠান | এদের একজন ধবলরোগী
একজন টাকওয়ালা এবং আরেকজন অন্ধ |

ফেরেশতার অনুগহে এই তিন জনেরই শারীরিক ক্রুটি দূর হলো। তিন জনই সুন্দর সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের চেহারা
পেল। শুধু তাই নয়, ফেরেশতার কৃপায় প্রথম জন একটি উট থেকে বহু উটের, দ্বিতীয় জন একটি গাভি থেকে
বহু গাভির এবং তৃতীয় জন একটি ছাগল থেকে বহু ছাগলের মালিক হয়ে গেল।

কিছুদিন পর এদের পরীক্ষা করার জন্য ফেরেশতা গরিব বিদেশির ছন্মবেশে এদের কাছে হাজির হলেন | তিনি
একেক জনের কাছে গিয়ে তাদের আগের দুরবস্থার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তাকে কিছু সাহায্য করতে বললেন |
প্রথম দুজন তাদের আগের অবস্থার কথা অস্বীকার করে ছগ্মবেশী ফেরেশতাকে খালি হাতে বিদায় দিল। অন্যদিকে
তৃতীয় জন নির্ধিধায় ফেরেশতার ইচ্ছেমতো সবকিছু দিতে রাজি হল | আল্লাহ তার উপর খুশি হলেন এবং তার
সম্পদ তারই রয়ে গেল। প্রথম দুজনের উপর আল্লাহ অসন্তুষ্ট হলেন এবং তাদের অবস্থা আগের মতো হয়ে

গেল | অকৃতজ্ঞরা তাদের অকৃতজ্ঞতার উপযুক্ত ফল পেল |

৪ সততার পুরস্কার

লেখক-পরিচিতি

মুহম্মদ শহীদুল্লাহর জন্ম ১৮৮৫ খ্রিষ্টাব্দে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগণা জেলার পেয়ারা গ্রামে | তিনি
বহুভাষাবিদ ও afew হিসেবে খ্যাত। মুহম্মদ শহীদুল্লাহ কলকাতা সিটি কলেজ থেকে সংস্কৃতে বিএ অনার্স ও
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভাষাতন্ত্ে এমএ পাস করেন। তিনি ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাতন্ত
বিভাগের প্রথম ছাত্র। পরে তিনি প্যারিসের সোরবন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টর অব লিটারেচার ডিগ্রি লাভ
করেন। বাংলা Stat ও সাহিত্যের ইতিহাস রচনায় তিনি অসাধারণ পাপ্তিত্যের পরিচয় দিয়েছেন। বাংলা ব্যাকরণ
রচনাতেও তাঁর অবদান স্মরণীয় |

কর্মজীবনে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন | ভাষা ও
সাহিত্য নিয়ে গবেষণার স্বীকৃতি হিসেবে তিনি অনেক পুরস্কার পেয়েছেন। ছোটদের জন্য তাঁর লেখা রচনাগুলোর
মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- ‘শেষ নবীর সন্ধানে’ ও “গল্প মঞ্জুরী” | তাঁর সম্পাদনায় শিশু-পত্রিকা “Aga প্রকাশিত
হয়। “বাংলা ভাষার আঞ্চলিক অভিধান’ সম্পাদনা তাঁর অসামান্ কীর্তি ١

মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হল প্রাঙ্গণে তাঁকে
সমাহিত করা হয়।

বহুনির্বাচনি প্রশ্ন
১. ফেরেশতা কেন আরব দেশের লোকদের কাছে এসেছিলেন?
ক. সাহায্য নেওয়ার জন্য খ. পরীক্ষা নেওয়ার জন্য
গ. শিক্ষা দেওয়ার জন্য ঘ. মূল্যায়নের জন্য

২. অন্ধ ব্যক্তি ফেরেশতাকে সবকিছু দিতে রাজি হয়েছিল কেন?
ক. আল্লাহ্‌র প্রতি কৃতজ্ঞ থাকায় খ. তার ছাগল বেশি হয়েছিল
গ. তার আর ধনসম্পদের দরকার ছিল না ঘ. সে অকৃপণ ছিল

২০২৫

২০২৫

চারুপাঠ ৫

উদ্দীপকটি পড় এবং ৩ ও 8 নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও:
নন্দীপাড়া গ্রামের নওশাদ পরোপকারী মানুষ। এইতো সেদিন প্রতিবেশী কাশিমের বাড়িতে
আগুন লাগলে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাশিমকে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে উদ্ধার করে নওশাদ |

এর কিছুদিন পর নওশাদ একটি দুর্ঘটনায় হাসপাতালে যখন চিকিৎসাধীন তখন কাশিম নিজের রক্ত দিয়ে
নওশাদকে সুস্থ করে তোলেন।

৩. উদ্দীপকের কাশিমের সাথে “সততার পুরস্কার’ গল্পের কার সাদৃশ্য রয়েছে?
ক. ধবলরোগী
খ. টাকওয়ালা
গ. অন্ধলোক
ঘ. বিদেশি

৪. উদ্দীপকের কাশিমের সাথে “সততার পুরস্কার” গল্পের যে দিকটি প্রকাশ পেয়েছে তা হলো-

|. নৈতিক মূল্যবোধ

ii, পরোপকার

iii, কৃতজ্জতাবোধ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক.।ও || খ.। ও ||
{isi 5. 113 ti

৬ সততার পুরক্ষার

সৃজনশীল পর্ন

কালাম, আবুল ও হাফিজ একই গ্রামে বাস করে। তাদের অবস্থা তেমন ভালো নয় | কোনো মতে দিন অতিবাহিত
করে। এ কারণে হাজি সাহেব তার যাকাতের টাকা দিয়ে আবুলকে একটা রিক্সা, কালামকে একটা ভ্যানগাড়ি আর
হাফিজকে একটা সেলাই মেশিন কিনে দিলেন। তিনি বললেন, তোমরা পরিশ্রম করে খাও, আর তোমাদের সাধ্যমতো
গরিব মানুষের উপকার করো। কিছুদিন পর হাজি সাহেব তাদের পরীক্ষা করার জন্য এক ভিক্ষুককে পাঠালেন
তাদের কাছে সাহায্য চাইতে | আবুল আর কালাম কোনো সাহায্যই করলো at) কিন্তু হাফিজ বিনা পয়সায়

ভিক্ষুকের জামাটা সেলাই করে দিল ١

ক. স্বর্গীয় দূত কতজন ইহুদিকে পরীক্ষা করেছিলেন?

খ. স্বর্গীয় দূত মানুষের ছদ্দবেশ ধারণ করেছিলেন কেন?

গ. কালাম ও আবুলের কাজের মধ্যে “সততার পুরস্কার* গল্পের যে দিকটি প্রতিফলিত তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “হাফিজের কাজের মধ্যেই “সততার পুরস্কার” গল্পের মূল শিক্ষা নিহিত”-_ কথাটি বিশ্লেষণ কর।

২০২৫

২. মিনু

২০২৫

মা-মরা মেয়ে মিনু | বাবা জন্মের আগেই মারা গেছে। সে মানুষ হচ্ছে এক দূরসম্পর্কের পিসিমার বাড়িতে |
বয়স মাত্র দশ, কিন্তু এই বয়সেই সবরকম কাজ করতে পারে সে | সবরকম কাজই করতে হয় | লোকে অবশ্য
বলে যোগেন বসাক মহৎ লোক বলেই অনাথা বোবা মেয়েটাকে আশ্রয় দিয়েছেন | মহৎ হয়ে সুবিধাই
হয়েছে যোগেন বসাকের ١ পেটভাতায় এমন সর্বগণান্বিতা চবিবশ ঘণ্টার চাকরানী পাওয়া শক্ত হতো তীর
পক্ষে | বোবা হওয়াতে আরো সুবিধা হয়েছে, নীরবে কাজ করে | মিনু শুধু বোবা নর, ঈষৎ কালাও | অনেক
চেঁচিয়ে বললে, তবে শুনতে পায় | সব কথা শোনার দরকারও হয় না তার | ঠোটনাড়া আর মুখের ভাব
দেখেই সব বুঝতে পারে | এছাড়া তার আর একটা যষ্ঠ ইন্দ্রিয় আছে যার সাহায্যে সে এমন সব জিনিস
বুঝতে পারে, এমন সব জিনিস মনে মনে সৃষ্টি করে, সাধারণ বুদ্ধিতে যার মানে হয় না | মিনুর জগৎ চোখের
জগৎ দৃষ্টির ভিতর দিয়েই সৃষ্টিকে গ্রহণ করেছে সে | শুধু গ্রহণ করে নি, নতুন রুপে নতুন রং আরোপ করেছে তাতে |

খুব ভোরে ওঠে সে ١ ভোর চারটের সময় | উঠেই দেখতে পায় পূর্ব আকাশে দপদপ করে জুলছে শুকতারা।
পরিচিত বন্ধুকে দেখলে মুখে যেমন মৃদু হাসি ফুটে ওঠে, তেমনি হাসি ফুটে ওঠে মিনুর মুখেও | মিনু মনে
মনে বলে_-সই ঠিক সময়ে উঠেছ দেখছি | বৈজ্ঞানিকের চোখে শুকতারা বিরাট বিশাল anes
প্রকাণ্ড গ্রহ, কবির চোখে নিশাবসানের আলোকদূত, কিন্তু মিনুর চোখে সে সই | মিনুর বিশ্বাস সে-ও তার
মতো কয়লা ভাঙ্ঙতে উঠেছে ভোর বেলার, আকাশবাসী তার কোনো পিসেমশায়ের গৃহস্থালিতে উন্ুন ধরাবার
জন্যে | আকাশের পিসেমশারও হয়তো ডেলিপ্যাসেঞ্জারি করে তার নিজের পিসেমশায়ের মতো | শুকতারার

রত মিনু

আশেপাশে কালো মেঘের টুকরো যখন দেখতে পায়, তখন ভাবে এ যে কয়লা | কী বিচ্ছিরি করে ছড়িয়ে
রেখেছে আজ | বলে আর মুচকি মুচকি হাসে | তারপর নিজে যায় সে কয়লা ভাঙতে | কয়লাগুলো ওর 13: |
“ga উপর হাতুড়ি চালিয়ে ভারি wie হয় ওর | হাতুড়িটার নাম রেখেছে গদাই, আর যে পাথরটার উপর
রেখে কয়লা ভাঙে তার নাম দিয়েছে শানু | শানের সঙ্গে মিল আছে বলে বোধ হয় | কয়লা-গাদার কাছে
গিয়ে রোজ সে ওদের মনে মনে ডাকে–ও গদাই ও শানু ওঠো এবার, রাত যে পুইয়ে গেছে | সই এসে কয়লা
ভাঙছে | তোমরাও ওঠো, কয়লা ভেঙে তারপর যায় সে ঘুটের কাছে | ঘুটে তার কাছে Yo নয়,তরকারি | Carag
নাম রাক্ষসী | উনুন রাক্ষসী কেরোসিন তেল দেওয়া
ঘুটের তরকারি দিরে শত্রুদের মানে কয়লাদের
\

ভারি আনন্দ হয় মিনুর। জলন্ত কয়লাগুলোকে তার ২
মনে হ্র FSIS মাংস, আর আগুনের লাল আভাকে SC VQ
মনে হয় রাক্ষসীর wie | বিস্কারিত নয়নে সে চেয়ে
থাকে | তারপর ছুটে চলে যার উঠোনে; আকাশের
সেদিন সে ভাবে সইয়ের Bar চমৎকার আচ —
ভাবে, ছাই পরিষ্কার করে নি, তাই আঁচ ওঠে নি

আজ | এইভাবে নিজের একটা অভিনব জগৎ সৃষ্টি 7
করেছে সে মনে মনে | সে জগতের সঙ্গে বাইরের ene

জগতের মিল HR সে জগতে তার শত্রুমিত্র সব

আলাদা আলাদা । ঘটিটার নাম af) ঘটিটা নি
একদিন হাত থেকে পড়ে গিরে তুবড়ে গেল। মিনুর চিএ

সে কী কান্না! তোবড়ানো জায়গাটায় রোজ হাত

বুলিয়ে দেয় | গেলাস চারটের নাম AY, বারু, তারু

আর কারু ١ চারটে গেলাসই একরকম | কিন্তু মিনুর

চোখে তাদের পার্থকা ধরা পড়ে | গেলাসগুলোকে যখন মাজে বা ধোয় তখন মনে হয় সে যেন ছোট ছেলেদের
ম্লান করাচ্ছে | মিটসেফটা ওর শত্রু। ওটার নাম দিয়েছে গপগপা | গপগপ করে সব জিনিস পেটে
পুরে নেয় | মাঝে মাঝে একদৃষ্টে চেয়ে থাকে মিটসেফের চকচকে তালাটার দিকে, আর মনে মনে বলে-
আ মর, মুখপোড়া সব জিনিস পেটে পুরে বসে আছে | মিনুর আর একটি দৈনন্দিন কর্তব্য আছে | যখন অবসর
পায় টুক করে চলে যায় ছাদে | ছাদ থেকে একটা বড় কীঠাল গাছ দেখা যায় | কাঠাল গাছের মাথার দিক
থেকে একটা সরু শুকনো ভাল বেরিয়ে আছে | সেই ডালটার দিকে সাথহে চেয়ে থাকে মিনু | মনে হয় তার
সমস্ত অন্তর যেন তার দৃষ্টিপথে বেরিয়ে গিয়ে আশ্রয় করেছে ওই ডালটাকে | এর কারণ আছে। তার

3
7”

চারুপাঠ ৯

Ger পূর্বেই তার বাবার মৃত্যু হয়েছিল | বাবাকে সে দেখে নি। অনেকদিন আগে তার মাসিমা তার
কানের কাছে চিৎকার করে একটা বিস্ময়কর খবর বলেছিল | তার বাবা নাকি বিদেশ গেছে, অনেক দূর
বিদেশ, মিনু বড় হলে তার কাছে ফিরে আসবে, হয়তো তার কোলেই আসবে | মিনু বুঝতে পারে নি
ব্যাপারটা ভালো করে | একটা জিনিস কেবল তার মনে গাথা হয়ে ছিল, বাবা ফিরে আসবে | কবে 7
মিনু কত বড় হলে আসবে? কথাটা মাঝে মাঝে ভাবত সে |

এমন সময় একদিন একটা ঘটনা ঘটল | সে সেদিনও ছাদে দীড়িয়েছিল | দেখতে পেল পাশের বাড়ির টুনুর
বাবা এলো বিদেশ থেকে অনেক জিনিসপত্র নিয়ে, আর ঠিক সেই সময়ে তার নজরে পড়ল 3 সবু ডালটায় একটা
হলদে পাখিও এসে বসল | সেদিন থেকে তার বদ্ধ ধারণা হয়ে গেছে ওই সরু ডালে যেদিন হলদে পাখি এসে
আবার বসবে, সেদিনই তার বাবা আসবে বিদেশ থেকে | তাই ফাক পেলেই সে ছাদে ওঠে | কীঠাল গাছের
ওই সরু ডালটার দিকে চেয়ে থাকে | হলদে পাখি কিন্তু আর এসে বসে না। তবু রোজ একবার ছাদে ওঠে
মিনু | এটা তার দৈনন্দিন কর্তব্যের মধ্যে একটা ١ এর কয়েকদিন পর রাত্রে কম্প দিয়ে জবর এলো তার | কাউকে
কিছু বললে না। মনে হলো Ga হওয়াটাও বুঝি অপরাধ একটা | ভোরে ঘুম ভেঙে গেল, রোজ যেমন কয়লা
ভাঙতে যায় সেদিনও তেমনি গেল, সেদিনও চোখে পড়ল শুকতারাটা দপদপ করে জুলছে | মনে মনে বলল-_
সই এসেছিস | আমার শরীরটা আজ ভালো নেই ভাই | তুই ভালো আছিস তো? উনুনে আচ দিয়ে কিন্তু সে আর
জল ভরতে পারল না সেদিন | শরীরটা বড্ড বেশি খারাপ হতে লাগল | আস্তে আস্তে গিয়ে শুয়ে পড়ল নিজের
বিছানায় | কেমন যেন ঘোর-ঘোর মনে হতে লাগল | নিজের ছোট্ট ঘরটিতে মিনু জুরের ঘোরে শুয়ে রইল
খানিকক্ষণ | জুরের ঘোরেই হঠাৎ তার মনে হয় একটা দরকারি কাজ করা হয় নি। আস্তে আস্তে উঠল সে বিছানা
থেকে, তারপর খিড়কির দরজা দিয়ে গিয়ে দাড়াল ছাদের সিঁড়ির কাছে | সিঁড়ির কাছে কিছুক্ষণ দাড়িয়ে থেকে
আস্তে আস্তে উঠে গেল ছাদে । কেউ দেখতে পেল না । পিসিমা পিসেমশাই তখনও ঘুমুচ্ছেন | ছাদে উঠেই
চোখে পড়ল লালে লাল হয়ে গেছে পূর্বাকাশ | বাঃ চমৎকার আঁচ উঠেছে তো সইয়ের | একটু হাসল সে।
তারপর চাইল সেই সবু ডালটার দিকে | সর্বাঙ্জা রোমাঞ্চিত হয়ে উঠল তার | একটা হলদে পাখি এসে বসেছে |
তাহলে তো বাবা নিশ্চয় এসেছে | আর এক মুহুর্ত ও দীড়াল না ছাদে | যদিও পা টলছিল তবু সে প্রায় ছুটে
বেরিয়ে এলো বাইরে ١

ফর্মা নং-২, চারুপাঠ-৬ষ্ঠ

১০ মিনু

শব্দার্থ ও টীকা

পেটভাতায় — পেটেভাতে | প্রয়োজনীয় খাদ্যের বিনিময়ে ।

কালা — বধির | কানে কম শোনে এমন |

ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় — চোখ, কান, নাক, জিভ, তৃক-_এই পাচ ইন্দ্রিয়ের বাইরে বিশেষ কিছু।
অতীন্দ্রিয় উপলব্ধি |

শুকতারা — সূর্যোদয়ের আগে পুব আকাশে এবং সূর্যাস্তের পর পশ্চিম আকাশে
নক্ষত্রের মতো দীপ্তিমান শুত্রগ্রহ |

গ্রহ — সূর্য প্রদক্ষিণকারী জ্যোতিষ্ক |

সই — সখির কথ্য রূপ | বান্ধবী | সহচরী |

আকাশবাসী — কল্পিত উধ্বলোকে বসবাসকারী |

ডেলিপ্যাসেঞ্জারি — প্রত্যহ যাতায়াতকারী |

উনুন _ চুলা।

মিটসেফ — রান্নাঘরে খাদ্য রাখার তাকবিশিষ্ট বাক্স |

খিড়কি _ বাড়ির পেছনের ছোট দরজা |

রোমাঞ্তিত – পুলকিত | আনন্দিত |

পাঠের উদ্দেশ্য

বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষের প্রতি মমতৃবোধ জাগ্রত করা |

পাঠ-পরিচিতি

বিচিত্র মানুষের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে আমাদের এ সমাজ | কেউ সুস্থ, কেউবা পুরো সুস্থ নয়৷ বাক্প্রতিবনধী
মানুষও আমাদের সমাজে প্রায়ই দেখা যায়। ছোট্ট মেয়ে মিনু বাক্‌ ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী | তার মা-বাবা নেই।
তাই বলে জীবনকে সে তুচ্ছ মনে করে না। দূর-সম্পকীয় এক আত্মীয়ের বাসায় তাকে থাকতে হয়।
সেখানে গৃহকর্মে তার অখণ্ড মনোযোগ | শুধু তাই নয়, প্রকৃতির সঙ্গোও সে মিতালি পাতিয়েছে। ভোরবেলাকার
নতুন সূর্যকে নিজের জ্বালানো চুল্লির সঙ্গে তুলনা করতেই তার ভালো লাগে। হলদে পাখি দেখে তার মনে
পুলক জাগে ١ পাশের বাসায় কোনো এক প্রবাসী পিতার আগমন লক্ষ করে সে মনে করে, একদিন তার
বাবাও ফিরে আসবে | পিতার জন্য মনে মনে অপেক্ষা করে কিশোরী | হলদে পাখি আসে কিন্তু তার পিতা

আসে না– এই কষ্ট তার একান্ত নিজস্ব | তবুও সে স্বপ্ন দেখে | এই স্বপ্নই তাকে সমস্ত প্রতিকূলতা অতিক্রম
করতে সাহাযা করে।

২০২৫

২০২৫

চারুপপাঠ ১১

লেখক-পরিচিতি

বনফুলের প্রকৃত নাম বলাইচাদ মুখোপাধ্যায়। তিনি ১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দে ভারতের বিহারে জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি পেশায় ছিলেন চিকিৎসক | বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে চাকরি করলেও সাহিত্যের প্রতি, তার 5
ছিল ব্যাপক | তিনি তার গল্পকে আকারে ছোট, ব্যঙ্গ-রসিকতায় পুর্ণ ও আকর্ষণীয় করে উপস্থাপনার মাধ্যমে
উপাদানকে তিনি গল্লের বিষয় করেছেন। তার রচিত উল্লেখযোগ্য গল্পগ্রন্থ হলো : “বনফুলের গল্প’, ‘বাহুল্য’,
সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতি হিসেবে তাঁকে ‘পদ্মভৃষণ’ (ভারত) উপাধি প্রদান করা হয়। ১৯৭৯ খ্রিষ্টাব্দে বনফুল
কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।

কর্ম-অনুশীলন

১. বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন একজন শিশুকে নিয়ে গল্প, কবিতা বা সংক্ষিপ্ত রচনা লেখ | মনে রাখবে তুমি
যা-ই লেখ না কেন শিশুটির প্রতি যেন মমতুবোধ প্রকাশ পায় |

২. বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের প্রতি সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রচারণার জন্য পোস্টার ও
লিফলেট তৈরি কর।

অনুশীলনী
বহুনির্বাচনি প্রশ্ন
১. মিনুর সই কে?
ক. চাদ খ. সূর্য
গ. মঙ্গল গ্রহ ঘ. শুকতারা

২. ‘মিনুর বাবা অনেক দূর বিদেশ আছে’_ এখানে “দূর বিদেশে” বলতে কোনটিকে বোঝানো হয়েছে?
ক. গ্রহ খ, আমেরিকা
গ. পরপার ঘ. আকাশ

১২ মিনু

উদ্দীপকটি পড় এবং ৩ ও 8 নম্র প্রশ্রের উত্তর দাও:

মায়ের ভালোবাসা পাবার প্রচণ্ড আকাঙ্ক্ষা, মাকে না দেখার অব্যক্ত ব্যাকুলতা কলকাতায় থাকা ফটিকের মনকে
আচ্ছন্ন করে রাখে | শহরের অনাত্ীয় পরিবেশ থেকে বাচার জন্য মাঝে মধ্যে তার মন কেঁদে উঠে “aT” ‘মা’
বলে | মায়ের কাছে ফিরে যাবার আশায় থেকে ফটিক একদিন সবার কাছ থেকে চিরদিনের ছুটি নিয়ে অসীমের
পথে পাড়ি জমায় |

৩. উদ্দীপকটিতে ‘fay’ গল্পের যে বিষয়টি লক্ষ করা যায় তা হলো-_

ক. আত্মীয়ের অনাদর অবহেলা খ. প্রিয়জনের প্রতি মমতববোধ
গ. প্রকৃতির প্রতি আকর্ষণ ঘ. শারীরিক অক্ষমতা

8. উদ্দীপকটিতে মিনু ও ফটিকের পরিণতির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য —

i, স্বাভাবিকতা জীবনে অপরিহার্য

ii, প্রকৃতিই হলো শ্রেষ্ঠ আশ্রয়

iii, পারস্পরিক সহমর্মিতা জীবনকে বাচিয়ে রাখে
নিচের কোনটি সঠিক?

ক. [511 খ. 1111

গ. 11 ও ill ঘ. i, ii ও 111

২০২৫

২০২৫

চারুপাঠ ১৩

সৃজনশীল প্রশ্ন

১. বন্যা সারা সকাল মিসেস সালমার বাসায় কাজ করে, তাকে খালাম্মা বলে ডাকে | সে মিসেস সালমার
যাবতীয় কাজে সাহায্য করার চেষ্টা করে | দিবা শাখার একটি স্কুলেও সে পড়ে | পড়ালেখায় সে পিছিয়ে
নেই । শুধু প্রকৃতির কোনো কিছুর সঙ্গে তার সখ্য গড়ে ওঠে নিঃ সে সময়ই বা তার কোথায়? তার নিজের
জীবন আর কাজ নিয়েই সে ব্যস্ত । প্রকৃতিতে নয়, নিজের কাজেই সে শান্তি খুঁজে পায়। বন্যা তার কাজ
দিয়ে, কথা দিয়ে মিসেস সালমাকে এমন করে নিয়েছে যে মিসেস সালমাও বন্যাকে পরিবারের অন্য
সদস্যের মতোই মনে করে |

ঘষ্ঠ ইন্দ্রিয় বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
অবস্থানগত দিক থেকে উদ্দীপকের বন্যা ও মিনুর মধ্যে যে বৈসাদৃশ্য লক্ষ করা যায়, তা ব্যাখ্যা কর |
* বন্যার শিক্ষা ছিল প্রাতিষ্ঠানিক, আর প্রকৃতি হচ্ছে মিনুর পাঠশালা’_ কথাটি বিশ্লেষণ কর।

A aA 4 3B

চারুপাঠ ষষ্ট শ্রেণী

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক ২০১২ শিক্ষাবর্ষ থেকে
ষষ্ঠ শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকরুপে নির্ধারিত

চারুপাঠ
ষষ্ঠ শ্রেণি

২০২৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য পরিমার্জিত

জাতীয় PST ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, বাংলাদেশ

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড

৬৯-৭০, মতিঝিল বাণিজাক এলাকা, ঢাকা-১০০০
কর্তৃক প্রকাশিত

প্রকাশক কর্তৃক সরবস্ত সংরক্ষিত ]

প্রথম সংক্ষরণ রচনা ও সম্পাদনা
অধ্যাপক ড. মাহবুবুল হক
অধ্যাপক নিরঞ্জন অধিকারী
অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ
অধ্যাপক ড. রফিকউল্লাহ খান
অধ্যাপক ড. সৈয়দ আজিজুল হক
অধ্যাপক শ্যামলী আকবর
অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর
ড. সরকার আবদুল মান্নান
ভ. শোয়াইব জিবরান
শামীম জাহান আহসান

প্রথম প্রকাশ : সেপ্টেম্বর ২০১১
পরিমার্জিত সংস্করণ : সেপ্টেম্বর ২০১৪
পরিমার্জিত সংস্করণ : সেপ্টেম্বর ২০১৬
পরিমার্জিত সংস্করণ : নভেম্বর ২০২০
পরিমার্জিত সংস্করণ : অকৌবর ২০২৪

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক বিনামূল্যে বিতরণের জন্য

প্রসঙ্গ কথা

বর্তমানে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার উপযোগ বহুমাত্রিক। শুধু জ্ঞান পরিবেশন নয়, দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার
মাধ্যমে সমৃদ্ধ জাতিগঠন এই শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য | একই সাথে মানবিক ও বিজ্ঞানমনক্ষ সমাজগঠন নিশ্চিত
করার প্রধান অবলম্বনও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা। বর্তমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর বিশ্বে জাতি হিসেবে মাথা তুলে
দাঁড়াতে হলে আমাদের মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা প্রয়োজন | এর পাশাপাশি শিক্ষাঙ্থীদের দেশপ্রেম, মূল্যবোধ
ও নৈতিকতার শক্তিতে উজ্জীবিত করে তোলাও জরুরি |

শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড আর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার প্রাণ শিক্ষাক্রম | আর শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের সবচেয়ে গুরুতৃপূর্ণ
উপকরণ হলো পাঠ্যবই | জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০-এর উদ্দেশ্যসমূহ সামনে রেখে গৃহীত হয়েছে একটি
লক্ষ্যাভিসারী শিক্ষাক্রম | এর আলোকে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুন্তক বোর্ড (এনসিটিবি) মানসম্পন্ন পাঠ্যপুন্তক
প্রণয়ন, মুদ্রণ ও বিতরণের কাজটি নিষ্ঠার সাথে করে যাচ্ছে। সময়ের চাহিদা ও বাস্তবতার আলোকে শিক্ষাক্রম,
পাঠ্যপুস্তক ও মূল্যায়নপদ্ধতির পরিবর্তন, পরিমার্জন ও পরিশোধনের কাজটিও এই প্রতিষ্ঠান করে থাকে |

বাংলাদেশের শিক্ষার স্তরবিন্যাসে মাধ্যমিক wa বিশেষ গুরুতৃপূর্ণ। বইটি এই স্তরের শিক্ষার্থীদের বয়স,
মানসম্রবণতা ও কৌতৃহলের সাথে সংগতিপূর্ণ এবং একইসাথে শিক্ষাক্রমের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনের সহায়ক।
বিষয়জ্ঞানে সমৃদ্ধ শিক্ষক ও বিশেষজ্ঞগণ বইটি রচনা ও সম্পাদনা করেছেন | আশা করি বইটি বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান
পরিবেশনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মনন ও সৃজনের বিকাশে বিশেষ ভূমিকা রাখবে |

ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বাংলা বিষয়ের নির্ধারিত পাঠ্যপুন্তক চারুপাঠ। শিক্ষাক্রমের অনুসরণে শিখনফল অর্জনে
সহায়ক গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ_এ সকল বিষয় বইয়ে সংকলন করা হয়েছে | এতে করে শিক্ষার্থীরা জীবন ও
জগতের বিচিত্র বিষয়ে কৌতুহলী হয়ে উঠবে এবং তাদের পাঠে আগ্রহ সৃষ্টি হবে। বিষয় নির্বাচনের সময়
শিক্ষার্থীদের ধারণক্ষমতার কথা বিশেষভাবে স্মরণ রাখা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যাতে বাংলা সাহিত্যের বিবর্তন
সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারে সে ব্ষিয় বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। 1837789 এই বৈচিত্র্য শিক্ষার্থীদের কেবল
সাহিত্যের রস উপভোগের সুযোগ তৈরি করে দেবে না; তাদের মানবিক উৎকর্ষ সাধনেও ভূমিকা পালন করবে |
আশা করা যায়, পাঠ্যপুস্তকটি প্রত্যাশিত লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হবে এবং লেখক সম্পাদকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের
শ্রম সার্থক হবে।

পাঠ্যবই যাতে জবরদক্তিমূলক ও ক্লান্তিকর অনুষঙ্গ না হয়ে উঠে বরং আনন্দাশ্রয়ী হয়ে ওঠে, বইটি রচনার সময়
সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা হয়েছে। সর্বশেষ তথ্য-উপাত্ত সহযোগে বিষয়বস্তু উপদ্থাপন করা হয়েছে। চেষ্টা করা
হয়েছে বইটিকে যথাসন্তব দুর্বোধ্যতামুক্ত ও সাব্লীল ভাষায় লিখতে | ২০২৪ সালের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে
প্রয়োজনের নিরিখে পাঠ্যপুস্তকসমূহ পরিমার্জন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ২০১২ সালের শিক্ষাক্রম অনুযায়ী প্রণীত
পাঠ্যপুষ্কের সর্বশেষ সংক্ষরণকে ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। বানানের ক্ষেত্রে বাংলা একাডেমির প্রমিত
বানানরীতি অনুসৃত হয়েছে। যথাযথ সতর্কতা অবলম্বনের পরেও তথ্য-উপাত্ত ও ভাষাগত কিছু Suri থেকে
ঘাণয়া অসম্ভব AT | পরবর্তী সংস্করণে বইটিকে যথাসস্তব SYS করার আন্তরিক প্রয়াস থাকবে | এই বইয়ের
মানোন্নয়নে যে কোনো ধরনের যৌক্তিক পরামর্শ কৃতজ্ঞতার সাথে গৃহীত হবে।

পরিশেষে বইটি রচনা, সম্পাদনা ও অলংকরণে যাঁরা অবদান রেখেছেন তাঁদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই |

57533 ২০২৪ প্রফেসর ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান

চেয়ারম্যান
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, বাংলাদেশ

৪ সততার পুরস্কার

লেখক-পরিচিতি

মুহম্মদ শহীদুল্লাহর জন্ম ১৮৮৫ খ্রিষ্টাব্দে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগণা জেলার পেয়ারা গ্রামে | তিনি
বহুভাষাবিদ ও afew হিসেবে খ্যাত। মুহম্মদ শহীদুল্লাহ কলকাতা সিটি কলেজ থেকে সংস্কৃতে বিএ অনার্স ও
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভাষাতন্ত্ে এমএ পাস করেন। তিনি ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাতন্ত
বিভাগের প্রথম ছাত্র। পরে তিনি প্যারিসের সোরবন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টর অব লিটারেচার ডিগ্রি লাভ
করেন। বাংলা Stat ও সাহিত্যের ইতিহাস রচনায় তিনি অসাধারণ পাপ্তিত্যের পরিচয় দিয়েছেন। বাংলা ব্যাকরণ
রচনাতেও তাঁর অবদান স্মরণীয় |

কর্মজীবনে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন | ভাষা ও
সাহিত্য নিয়ে গবেষণার স্বীকৃতি হিসেবে তিনি অনেক পুরস্কার পেয়েছেন। ছোটদের জন্য তাঁর লেখা রচনাগুলোর
মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- ‘শেষ নবীর সন্ধানে’ ও “গল্প মঞ্জুরী” | তাঁর সম্পাদনায় শিশু-পত্রিকা “Aga প্রকাশিত
হয়। “বাংলা ভাষার আঞ্চলিক অভিধান’ সম্পাদনা তাঁর অসামান্ কীর্তি ١

মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হল প্রাঙ্গণে তাঁকে
সমাহিত করা হয়।

বহুনির্বাচনি প্রশ্ন
১. ফেরেশতা কেন আরব দেশের লোকদের কাছে এসেছিলেন?
ক. সাহায্য নেওয়ার জন্য খ. পরীক্ষা নেওয়ার জন্য
গ. শিক্ষা দেওয়ার জন্য ঘ. মূল্যায়নের জন্য

২. অন্ধ ব্যক্তি ফেরেশতাকে সবকিছু দিতে রাজি হয়েছিল কেন?
ক. আল্লাহ্‌র প্রতি কৃতজ্ঞ থাকায় খ. তার ছাগল বেশি হয়েছিল
গ. তার আর ধনসম্পদের দরকার ছিল না ঘ. সে অকৃপণ ছিল

২০২৫

২০২৫

চারুপাঠ ৫

উদ্দীপকটি পড় এবং ৩ ও 8 নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও:
নন্দীপাড়া গ্রামের নওশাদ পরোপকারী মানুষ। এইতো সেদিন প্রতিবেশী কাশিমের বাড়িতে
আগুন লাগলে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাশিমকে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে উদ্ধার করে নওশাদ |

এর কিছুদিন পর নওশাদ একটি দুর্ঘটনায় হাসপাতালে যখন চিকিৎসাধীন তখন কাশিম নিজের রক্ত দিয়ে
নওশাদকে সুস্থ করে তোলেন।

৩. উদ্দীপকের কাশিমের সাথে “সততার পুরস্কার’ গল্পের কার সাদৃশ্য রয়েছে?
ক. ধবলরোগী
খ. টাকওয়ালা
গ. অন্ধলোক
ঘ. বিদেশি

৪. উদ্দীপকের কাশিমের সাথে “সততার পুরস্কার” গল্পের যে দিকটি প্রকাশ পেয়েছে তা হলো-

|. নৈতিক মূল্যবোধ

ii, পরোপকার

iii, কৃতজ্জতাবোধ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক.।ও || খ.। ও ||
{isi 5. 113 ti

م بي 3 6 هج تي م ‎ye‏

مع 4 83 ‎০০‏ © تم م ‎ys‏

সততার পুরস্কার
নীল নদ আর পিরামিডের দেশ

মাদার তেরেসা

আমাদের লোকশিল্প

কত কাল ধরে

কার্টুন, ব্যঙ্গচিত্র ও পোস্টারের ভাষা

মানুষ জাতি
ঝিঙে ফুল

চিঠি বিলি

বাচতে দাও

পাখির কাছে ফুলের কাছে
ফাগুন মাস

কর্ম-অনুশীলন

মুহম্মদ শহীদুল্লাহ
সৈয়দ মুজতবা আলী
শওকত ওসমান
আবদুল্লাহ আল-মুতী
কামরুল হাসান

(সংকলিত)

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
কামিনী রায়
সত্যেন্রনাথ We
কাজী নজবুল ইসলাম

রোকনুজ্জামান খান

আল মাহমুদ
হুমাঘুন আজাদ

১০১
১০২-১০৩


Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *